প্রকাশিত: Thu, Jan 18, 2024 12:31 AM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 2:12 PM

ছবির কুকুরটা আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেলো

রুমী আহমেদ, ফেসবুক: আজ সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি ছবি দেখে খুব ডিস্টার্বড হয়েছি! আমি দীর্ঘদিন ধরে ক্রিটিকাল কেয়ার মেডিসিন নিয়ে কাজ করছি! গ্রুসাম ছবি-টবি আমাকে সাধারণত ডিস্টার্বড করে না! তবে এই ছবিটা আমাকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলো সারা দিনের জন্য! 

একটা স্ট্রে ডগ - যাদের নেড়ি কুকুর কুকুর বলি! রাস্তায় রাস্তায় এদের জন্ম, রাস্তায়ই এদের আট দশ বছরের জীবন যাপন; এখানেই ঘুম খাবার দাবার- মানুষের লাথি গুঁতা খেয়ে জীবন! এই রাস্তায়ই একদিন ওরা বৃদ্ধ হয়ে মারা যায়! ওদের জীবনটা দেখেছি - কি কারণে জানি ওদের বার্ধক্য আর মৃত্যুটা কখনো চোখে পড়েনি! 

ছবিটি যা দেখাচ্ছে তা হলো ওদেরই একজন, একটা রাস্তার কুকুর একটা এবোরটেড ফিটাস (ভ্রূণ) মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে!  যেভাবে ওরা নিজেদের শিশুকে মুখে করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়! একজাক্টলি ঠিক সেভাবেই। ছবিতে ভ্রূণ টাকে নিয়ার-টার্ম ই মনে হলো- অন্তত থার্ড ট্রাইমেস্টার এবরশন-এর প্রোডাক্ট । বলা হচ্ছে এটা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সামনে তোলা! জানি না ক্যাপশন কতটুকু সত্য এবং এটা কোথাকার বা কবেকার! তবে ছবিটা সত্যি তা দেখেই বোঝা যায়! 

আমাদের দেশে ভাগাড়ে, আস্তাকুঁড়ে, বনে, বাদাড়ে, নির্জন জায়গায় এধরণের এবরশন প্রোডাক্ট প্রায়ই পাওয়া যায়! মেডিকেল কলেজের আশেপাশে বেশি পাওয়া যায়! 

জানি না কুকুরটি কোথায় পেয়েছে জন্মের আগেই মৃত এই শিশুটিকে। ওর বিবেচনায় ও ভেবেছে এটা একটা মানব শিশু এবং এর নিরাপদ আশ্রয় দরকার! জানি না  কোন নিরাপদ জায়গায় কার কাছে কি আশায় সে নিয়ে যাবে এই মৃত ফিটাসটিকে! 

তবে এই শিশুর মাতা পিতা এই শিশুটিকে ত্যক্ত করলেও - ফেইল করলেও - রাস্তার এই কুকুরটি তার মানবতার  ( নাকি বলবো কুকুরতার ) লিটমাস টেস্টে পাস করেছে। মহামমতায়  মুখে তুলে নিয়ে রওনা হয়েছে ওর বুদ্ধিতে যা কুলায় সেই নিরাপদ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে । 

আমরা শিশুদের জন্মের আগে মারি - জন্মের পরে মারি! ভূরাজনৈতিক কুটকাচালের ক্রুর হিসেবে নিকেশে নির্দয় ভাবে হাজার হাজার শিশু হত্যা করি! 

আমরা নাকি আশরাফুল মাখলুকাত! আর কুকুর নাকি আমাদের গৃহস্থালিতে অস্পৃশ্য! কিন্তু ছবির ওই কুকুরটা আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেলো আমাদের এই আশরাফ হচ্ছে মেকি  আশরাফ, ঝুটা আশরাফ!